গত ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দৈনিক প্রথম আলোর একটি খবর চোখে পড়লো। খবর হিসেবে এর মূল্যমান যাই হোক না কেনো, বাঙলাদেশের ইতিহাস ও এ ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে খবরটি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ১৯৮১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সামরিক আদালতের কথিত বিচারে নিহত ১৩ সেনা কর্মকর্তার স্মরণসভায় আলোচকরা সামরিক আইনে বিচার সব সময় সঠিক হয় কিনা, তা তদন্তের সুপারিশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে একটু চিন্তা করলে আমাদের সামনে কয়েকটি দৃশ্য ভাসতে থাকে। এ কথা সত্য যে, সামরিক বাহিনী যদিও জনগণের করের টাকায় চলে, তবু সেনানিবাস নামক সুরক্ষিত এলাকায় কী ঘটে, কীভাবে ঘটে, তার কোনো কিছুই আমরা সাধারণ জনগণ জানি না। নিরাপত্তার উঁচু দেয়ালের কারণে জবাবদিহিতা কী জিনিস, সম্ভবত সেনাবাহিনী তা জানেও না, জানার চেষ্টাও করে না। সামরিক আইন তাই এক অর্থে এক নায়কের হাতিয়ার, অজস্র অন্যায়ের অনুঘটক। আমার এ বক্তব্যগুলো যদি ছাপা নাও হয়, তবু এ কথাগুলো যে সত্য, তা সেনাবাহিনীর প্রাক্তন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট।
আরেকটি বিষয় হলো, যারা এ বক্তব্যগুলো দিয়েছেন, তারা নিজেরাও যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন কেনো এসবের প্রতিবাদ করেননি, আর যদি শেষ পর্যন্ত করলেনই তবে এতোদিন পরে কেনো? এতোগুলো সেনা-সমর্থিত বা সেনাবাহিনীকৃত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের পর উনাদের বোধদয় হলো?
এ বিষয়গুলো সাধারণ জনগণের মনে প্রশ্ন জাগায়। অধিকাংশ সামরিক আইনের বিচার যে প্রহসনমূলক হয়, তা জনগণ জানলেও তাদের কিছুই করার থাকে না। কারণ কর দেয়া তাদের সংবিধানস্বীকৃত কর্তব্য- এটা আমরা জানলেও, তথ্য জানা যে আমাদের অধিকার- সেনাবাহিনী সম্ভবত সেটা জানে না।