গত বৃহস্পতিবার মহাজোটের ডাকা হরলতালে সেনা সদস্যদের ভূমিকা পুনরায় আতঙ্কগ্রস্থ করেছে আমাদের। ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম হরতাল দমনে সেনা সদস্যদের নগ্ন তৎপরতা দেখা গেলো। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সেনা মোতায়ন এবং এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টাদের পরস্পরবিরোধী মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরো ঘোলাটে করে ফেলেছে। সেনাবাহিনীর দায়িত্ব দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা, হরতালে পিকেটার দমন করা নয়। কিন্তু ইয়াজউদ্দিন দেশের সেনা সদস্যদের এমন কাজে ব্যবহার করছেন এবং তাদের বিশ্রামের কথা বলে আদতে তাদের অপমান করছেন। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে এবং সংবাদপত্রে সেনা তৎপরতার যে চিত্র ধরা পড়েছে, তা দেখে বোঝার উপায় নেই এটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাকি স্বৈর-সরকার।
তবে সেনাবহিনীরও মনে রাখা দরকার যে, এ দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে তাদের ব্যয়ভার চালানো হয়। জনগণের অধিকার আদায়ের মিছিলে যে সেনাবাহিনী বন্দুক উঁচিয়ে দাঁড়িয়েছে, তারাই রাজপথ থেকে প্রত্যাখিত হয়েছে বারবার। আমাদের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, সেনাবাহিনী গণতন্ত্রের ধারক কিংবা রক্ষক হতে পারে না, বরং গণতন্ত্রের প্লাটফর্মে দাঁড়ানো জনতার আলোকিত মিছিলকে বারবার সামরিক উর্দির অন্ধকারে ঢেকে দেয়। বাঙলার ইতিহাস কি বারবার এ সত্য তুলে ধরেনি?