রবীন্দ্রনাথ আমার পরম আগ্রহের বিষয়। তিনি বিশ্বকবি কিংবা নোবেল বিজয়ী বাঙালি সাহিত্যিক এইজন্য নয়; তিনি আমার আগ্রহের প্রেক্ষণে থাকেন, কারণ তিনি খুব নীরবে বাঙালির অন্তরাত্মার ছবিটি দেখেছিলেন। উন্মোচন করেছিলেন বাঙলা কবিতাকে এবং উন্মোচিতো হয়েছিলেন নিজেও। তিনি আমার আগ্রহের কেন্দ্রে থাকেন, কারণ তিনি নির্দ্বিধায় সাড়া দিতে জানতেন থরোথরো সৌন্দর্যের ডাকে। কবিরাই একমাত্র সংক্রামকের মতো সাড়া দিতে জানেন।
রবীন্দ্রনাথ অনেকগুলো পরিচয়ে পরিচিত। বাঙালি তাঁকে আরও নানা পরিচয়ে পরিচিত করেছে। তবে আমার মনে হয়েছে, সবগুলো রবীন্দ্রনাথের জন্য প্রয়োজনীয় ছিলো না। এমনকি, প্রয়োজনীয় নয় এখনও। রবীন্দ্রনাথ করেছেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ; এবং আমার বিবেচনায়, তিনি অনেক অগুরুত্বপূর্ণ কাজও করেছেন। যিনি লিখেছেন দুঃসময় কিংবা নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ, সে-ই তিনি লিখেছেন চোখের বালি বা নৌকাডুবির মতো পাঠ-অযোগ্য উপান্যাস; আবার মনে হয়, কেবল চতুরঙ্গ লিখেই রবীন্দ্রনাথ ঔপন্যাসিক হিশেবে অমর হতে পারতেন, প্রয়োজন ছিলো না শেষের কবিতার মতো অমোন অতি-কথন প্রেমের উপন্যাস লেখার। রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছেন, বক্তৃতা দিয়েছেন, সেমিনার করেছেন, করেছেন আরও নানা কিছু এবং সবশেষে লিখেছেন-
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছো আকীর্ণ করি/ বিচিত্র ছলনা জালে/ হে ছলনাময়ী।
অতএব, শেষ অঙ্কে রবীন্দ্রনাথের জীবননাট্যও প্রবঞ্চিত, ছলনা জালে আবদ্ধ।
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নানাভাবে নানা কাজ হয়েছে, এখনও হচ্ছে। সামনে আরও হবে। যেহেতু তিনি বাঙালিকে প্রেম শিখিয়েছেন, সেহেতু বাঙালি তাঁকে অন্বেষণ করবেই। যেহেতু তিনি বাঙালিকে সৌন্দর্য চিনিয়েছেন, সেহেতু বাঙালি তাঁর সৌন্দর্যও খুঁজবে। রবীন্দ্রনাথ নানা মাত্রায় আমাদের সামনে এসেছেন। বলাই বাহুল্য, তাঁর সময়েও তিনি নানা মাত্রায় উপস্থাপিত হয়েছিলেন। শুনে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বিজ্ঞাপনের বিষয় এবং ছিলেন বিজ্ঞাপনের ভাষ্য নির্মাতা। অর্থাৎ, তৎকালীন বিজ্ঞাপন জগতের একটি বড়ো বিষয় ছিলো রবীন্দ্রনাথকে যে কোনোভাবেই হোক, বিজ্ঞাপনের অংশ করা।
বিজ্ঞাপনে রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর অংশগ্রহণ নিয়ে প্রথম কাজ করেন সমরেশ্বর বাগচী১। টেগোর রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের মুখপত্র রবীন্দ্রভাবনা পত্রিকার ১৯৮২ সালের সেপ্টেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা বিজ্ঞাপনে রবীন্দ্রনাথের লেখার ব্যবহার। এ লেখায় বিজ্ঞাপনে রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন লেখার ব্যবহার দেখানো হয়েছে, যা ছিলো অত্যন্ত শ্রমসাধ্য একটি কাজ। তবে মানতেই হবে, ১৯৮২ সালের প্রেক্ষাপট আর বর্তমান প্রেক্ষাপট এক নয়। বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন ঘটেছে নানা কিছুর। বিজ্ঞাপনের সংজ্ঞাও পাল্টেছে। সে-ই প্রেক্ষিতকে সামনে রেখেই আমি মূলত সংবাদ ভাষ্যকেও বিজ্ঞাপনের কাতারে এনে ফেলেছি। বলাই বাহুল্য, এখন সংবাদে কোনো কিছুর ব্যবহারটাও একটি বিজ্ঞাপন। রবীন্দ্রনাথের সময়েও সংবাদ হিশেবে ব্যবহৃত হয়েও কিছু বিষয় একেবারে বিজ্ঞাপনের মতোই কাজ করছিলো। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে, রবীন্দ্রনাথের লেখা নিয়ে বিজ্ঞাপন এবং সংবাদের সংখ্যা কম নয়। কবির জীবিতকালে লিখিত বা প্রচারিত বিষয়গুলি এখানে গৃহীত হয়েছে। কবির মৃত্যুর পরও অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিজেদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের নাম যুক্ত করে রবীন্দ্র জীবনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করে সংবাদ বা বিজ্ঞাপন প্রচার করেছেন। তবে সেগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা খুঁজে বের করা বেশ শ্রমসাধ্য, যা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। কেবল রবীন্দ্র জীবনীগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে যে কয়টি সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তা-ই এখানে লিপিবদ্ধ হলো।
১৯২৩ সালের ২০ জুলাই আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, তিনদিন নিউ অ্যাম্পায়ারে রবীন্দ্রনাথের বিসর্জন নাটক অভিনীত হবে। বিশ্বভারতীর সাহায্যার্থে ওই নাটকে অভিনয় করবেন রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং। বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের তারিখ, সময় এবং প্রবেশমূল্য প্রচারিত হয়েছিলো। মূল বিজ্ঞাপনের ভাষাটি ছিলো-
বিশ্বভারতীর সাহায্যার্থে “বিসর্জন” অভিনয়ে রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং যোগদান করিবেন। মঙ্গলবার ৩১শে জুলাই বৈকাল ৫।।; বুধবার ১লা অগস্ট বৈকাল ৫।।; এবং শুক্রবার ৩রা অগস্ট বৈকাল ৫।।২
বিজ্ঞাপনে ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী অভিনয় অনুষ্ঠিত না হয়ে অভিনয় মঞ্চস্থ হয়েছিলো পরিবর্তিত ২৫, ২৭ ও ২৮ আগস্ট তারিখে। অধ্যাপক প্রশান্তকুমার পাল তাঁর রবিজীবনীর নবম খণ্ডে এই অনুষ্ঠান বিষয়ে দ্বিতীয় বিজ্ঞাপনটি উদ্ধৃত করেছেন। ১৪ আগস্ট তারিখে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিলো-
বিশ্বভারতী সম্মিলনী/ বিশ্বভারতীর সাহায্যার্থে/ বিসর্জন/ রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং যোগদান করিবেন/ এম্পায়ার থিয়েটার নূতন দিন স্থির হইয়াছে।৩
১৯২৫ সালে স্টার থিয়েটারে গৃহপ্রবেশ নাটক চলার সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোলকাতায় ছিলেন। ১৯ ডিসেম্বর তিনি নাটকটি দেখেছিলেন। গৃহপ্রবেশ নাটকের দর্শকরূপে রবীন্দ্রনাথ উপস্থিত থাকবেন- এ বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞাপনরূপে ব্যবহার করেছিলেন। ১৯ ডিসেম্বর হল কর্তৃপক্ষ আনন্দবাজারে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলে-
স্টার থিয়েটার” অদ্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ স্টার থিয়েটারে তাঁর নূতন নাটক “গৃহপ্রবেশে”র অভিনয় দর্শন করিবেন। সম্ভবতঃ আগামীকল্য “চিরকুমার সভা”র অভিনয় দর্শন করিবেন।৪
মজার বিষয় হলো, চিরকুমার সভা দেখার কোনো সুযোগ রবীন্দ্রনাথের ছিলো না। এটা স্টার থিয়েটার কর্তৃপক্ষও জানতেন। কিন্তু তারপরও তারা এটি বিজ্ঞাপনে দেয়। এটি নিয়ে কেনো রবীন্দ্রনাথ কিছু বলেননি, তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। তবে নাটকটি যে তিনি দেখেননি, এটা জানা যায় রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে। তিনি জানান-
১৯২৫ এর ১৯ ডিসেম্বর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন সম্মেলনের অধিবেশনে তাঁর লিখিত সভাপতির অভিভাষণ পাঠ করেন। সকালে দর্শন কংগ্রেসে উপস্থিত থেকে সন্ধ্যায় “গৃহপ্রবেশ” দর্শন করেন। “চিরকুমার সভা” তিনি দর্শন করিতে পারিতেন না, কারণ কবি পরের দিনই শান্তি নিকেতনে ফিরিয়া যান।৫
১৯২৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কোলকাতার প্রখ্যাত রেকর্ড ব্যবসায়ি মল্লিক ব্রাদার্সের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞাপন আনন্দবাজার পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলো। ওই বিজ্ঞাপন থেকে রবীন্দ্রনাথ সংক্রান্ত অংশটুকু উদ্ধৃত করছি-
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের গান ও আবৃত্তি অতীব মধুর ও হৃদয়গ্রাহী হইয়াছে।
আবার শেষ পারানির কড়ি… … কৃষ্ণকলি
আমারে কে নিবি ভাই… … ভ্রষ্টলগ্ন।৬
১৯২৭ সালের ১ ডিসেম্বর রবীন্দ্রনাথের ঋতুরঙ্গ বিষয়ে বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিলো-
বিশ্বভারতীর উদ্যোগে আগামী সপ্তাহে রবীন্দ্রনাথের “ঋতুরঙ্গ” কলিকাতায় অভিনয় হইবে। কবি স্বয়ং যোগদান করিবেন।৭
এই বিজ্ঞাপনে প্রবেশ মূল্যের প্রাপ্তিস্থানরূপে কার এন্ড মহলানবীশ এবং বিশ্বভারতী পুস্তকালয়– এর উল্লেখ ছিলো।
১৯২৭ সালের ৫ ডিসেম্বর আমরা আরেকটি বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। সেখানে বলা হয়-
বিশ্বভারতীর সাহায্যকল্পে রবীন্দ্রনাথের “নটরাজ” শান্তিনিকেতনের ছাত্রী ও অধ্যাপকগণ অভিনয় করিবেন। কবি স্বয়ং যোগদান করিবেন।
এদিনের বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিলো ৮ এবং ৯ ডিসেম্বর ৬ নং দ্বারকানাথ ঠাকুর লেনে অভিনয় অনুষ্ঠিত হবে। এদিনও প্রবেশপত্রের প্রাপ্তিস্থানের উল্লেখ ছিলো।
১৯৩১ সালের ১৪ এবং ২১ নভেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকায় আমরা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে দুইটি বিজ্ঞাপনের উল্লেখ পাই। পূর্ণ থিয়েটার– এর পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন দুটো দেয়া হয়েছিলো। এখানে তার অংশ বিশেষ উল্লেখ করা হলো।
প্রথমটি (১৪ নভেম্বর)
সম্পূর্ণ সবাক চিত্র/ ঋষি টলস্টয়ের অমর কাহিনী/ রিসারেকসন/ – এতৎসহ স-বা-ক চিত্রে/ বিশ্বকবি-/ শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর/ এক জাতীয় সঙ্গীত আবৃত্তি করিবেন।৮
দ্বিতীয়টি (২১ নভেম্বর)
মিডনাইট সান/ শব্দমুখর চিত্র/- এতৎসহ/ সবাকচিত্রে/ শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর/ আবৃত্তি।৯
১৯৩২ সালের ৩ জানুয়ারি আনন্দবাজার পত্রিকায় একটি অসাধারণ বিজ্ঞাপনের খোঁজ পাওয়া যায়। সংবাদ আকারে ছাপা হলেও, তা মূলত ছিলো বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ করে কলিকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট। সেখানে বলা হয়-
কলিকাতা/ ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট/ রবীন্দ্রজয়ন্তীর/ উদ্যোগে/ ৪ঠা জানুয়ারি ১৯৩২, সকাল ৮টা/ অভিনন্দনপত্র প্রদান, অর্চনা, সঙ্গীত ইত্যাদি/ ইনস্টিটিউটের সমস্ত সদস্যকে উপস্থিত হইতে সাদর আহ্বান করা যাইতেছে। স্বয়ং কবি রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিতে/ সন্ধ্যা ৬টায়- রবীন্দ্রনাথের/ “তপতী”/ নাটকের অভিনয়/ এই নাটকটি শিশিরকুমার ভাদুড়িসহ সিনিয়র ও জুনিয়র মেম্বারগণ অভিনয় করিবেন।১০
এর একটি মজার দিক হলো, এখানে পাঁচ রকমের প্রবেশপত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছিলো। সংস্থার জুনিয়র মেম্বরগণের জন্য ছিলো বিশেষ ছাড়। আরও মজার বিষয় হলো, এখানে রবীন্দ্রনাথের পাশের আসনগুলোর প্রবেশপত্রের মূল্যও ছিলো খুব চড়া। কর্তৃপক্ষ চড়া দামে রবীন্দ্রনাথকে এখানে উপস্থিত করেছিলেন, সন্দেহ নেই।
১৯৩৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কবি বরাহনগরে কবি প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশের বাড়িতে ওঠেন। কারণ, কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন সমাবর্তনের তিনি সম্মানিত প্রধান অতিথি। ১৭ ফেব্রুয়ারি কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন সমাবর্তনে দীর্ঘদিনের রীতি লঙ্ঘন করে তিনি বাঙলায় সমাবর্তন ভাষণ দিলেন। এতোদিন পর্যন্ত এই ভাষণ ইংরেজিতে দেয়া হতো। সমাবর্তনের ঠিক আগের দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি ‘নাট্য নিকেতন’- এ ‘ক্যালকাটা থিয়েটার্স’- এর গোরা নাটকের অভিনয় দেখেন। অভিনয় দেখে রবীন্দ্রনাথ সেই দিনই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি শংসাপত্র প্রদান করেন। অভিনয়ে ছিলেন নরেশ মিত্র, জীবেন গাঙ্গুলি ও রানীবালা। নাট্যনিকেতন কর্তৃপক্ষ ২০ ফেব্রুয়ারি আনন্দবাজার পত্রিকায় যে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন, তাতে তাঁরা প্রথমেই কবির শংসাপত্রটি উদ্ধৃত করে পরে গোরা নাটকের বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। এখানে বিজ্ঞাপনটি উদ্ধৃত করা হলো-
Uttarayan, Smritinikentan Bengal
নাট্যনিকেতনের “গোরা”র অভিনয় দেখে আনন্দলাভ করেছি। ইতি- ১৬.২.৩৭/রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
ক্যালকাটা থিয়েটার্সের/ শ্রেষ্ঠ অর্ঘ্য/ গোরা/
শনিবার ২০শে ফেব্রুয়ারি ৭টায়, সোমবার ২২শে ফেব্রুয়ারি ৩টায়, রবিবার ২১শে ফেব্রুয়ারি ৩টায়, মঙ্গলবার ২৩শে ফেব্রুয়ারি ৩টায় রাজা রাজকিষণ স্ট্রিট (ফোন বি. বি. ৯৫১) নাট্য নিকেতন।১১
১৯৩১ সালের অক্টোবর মাসে ৩৭ নং বৌবাজার স্ট্রিটে স্বদেশী মেলার আয়োজন করা হয়েছিলো। সেই মেলা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তারিখ ছিলো ১৬ অক্টোবর। মেলায় কবির আগমন বার্তাকে প্রচার করে মেলা কর্তৃপক্ষ তাঁকে মেলার বিজ্ঞাপনরূপে প্রচার করেছিলেন। বিজ্ঞপ্তিতে মেলার কর্তৃপক্ষ ১৬ অক্টোবর, ১৯৩১ সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রচার করেছিলেন-
স্বদেশী মেলা/৩৭নং বহুবাজার স্ট্রীট (শিয়ালদহ)/ অদ্য কবি সম্রাট রবীন্দ্রনাথের/ শুভ পদার্পণ হইবে। অদ্য শুক্রবার, ১৬ই অক্টোবর/ মেলা বিকাল ৩টায় খুলিবে/ ৬টায় ম্যাজিক/ (প্রফেসর নোণ্ডি)/ ৭ টায় থট রিডিং ও ভেন্ট্রিলা-কুইজম।/ ৮টায় বায়োস্কোপ/প্রবেশ মূল্য তিন আনা/ শ্রীজ্ঞানাঞ্জন নিয়োগী/ সম্পাদক/১২
এখানে প্রবেশ মূল্যটি উল্লেখযোগ্য। কারণ, ১৯৩১ সালের এই স্বদেশী মেলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা বিজন ভট্টাচার্য উল্লেখ করেন- ওই মেলায় প্রবেশমূল্য ছিলো দুই আনা১৩। তাহলে ধরে নেয়াই যায়, রবীন্দ্রনাথের আগমন উপলক্ষ্যেই সেদিন বাড়ানো হয়েছিলো মেলার প্রবেশপত্রের মূল্য। বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যও ছিলো তাই।
রবীন্দ্রনাথের পুনশ্চ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত একটি কবিতা ‘চিররূপের বাণী’। অনেকেই হয়তো পড়ে থাকবেন। তারপরও কবিতাটির শেষ কিছু অংশ এখানে উদ্ধৃত করছি।
মাটির দানব মাটির রথে যাকে হরণ করে চলেছিলো
মনের রথ সেই নিরুদ্দেশ বাণীকে আনলে ফিরিয়ে কণ্ঠহীন গানে।
জয়ধ্বনি উঠলো মর্তলোকে।
দেহমুক্ত রূপের সঙ্গে যুগল মিলন হল দেহযুক্ত বাণীর
প্রাণ তরঙ্গিনীর তীরে, দেহ নিকেতনের প্রাঙ্গণে।১৪
মজার বিষয় হলো, এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন মূলত বিজ্ঞাপন হিশেবে। ‘টকি ফিল্ম’- এর বাঙলা নাম কী হতে পারে, এ প্রসঙ্গে ফিল্ম কর্তৃপক্ষ গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের কাছে। তিনি তখন এর বাঙলা নাম করেন- ‘রূপবাণী’। লিখিতভাবে তিনি নামকরণটি করেছিলেন ১৯৩২ সালের ১২ জুলাই। ‘রূপবাণী’ হলের নামকরণ উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছিলেন ‘চিররূপের বাণী’ কবিতাটি। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনটি আমরা পাই অমৃতবাজার পত্রিকায়। ১৯৩২ সালের ১৩ জুলাইয়ে বিজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হয়। সেখানে উল্লেখ ছিলো-
স্ক্রীন কর্পোরেশন লিমিটেড ৭৬/৩, কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটে নূতন ছায়াচিত্র গৃহের নাম দিলাম রূপবাণী- শ্রীরবীন্দ্রনাথ, ১২ জুলাই ১৯৩২।
রবীন্দ্রনাথকে বিজ্ঞাপনে ব্যবহারের আরেকটি নমুনা আমরা পাই ১৯৩৬ সালে। দ্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার লোকাল বোর্ডের নির্বাচনে অন্যতম প্রার্থী ছিলেন অমরকৃষ্ণ ঘোষ। তিনি রবীন্দ্রনাথের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৩৬ সালের ৯ অক্টোবর তারিখে কবির স্বাক্ষরিত বাঙলা এবং ইংরেজি আশীর্বাদ বাণীটি তিনি নির্বাচনে নিজের প্রচারে বা বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেন। কবির হস্তাক্ষরে সেই আশীর্বাদ বাণীটি ছিলো এমন-
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লোকাল বোর্ডের নির্বাচনে শ্রীযুক্ত অমরকৃষ্ণ ঘোষের সফলতা কামনা করি।
I earnestly desire the sucess of Sj. Amar Krishna Ghosh at the election to the Local Board of Reserve Bank. ১৫
পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিজ্ঞাপনটি বক্স করে প্রচারিত হয়েছিলো। রবীন্দ্রনাথের আশীর্বাদ কাজে লেগেছিলো। অমরকৃষ্ণ ঘোষ ৫৩৩৪টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লোকাল বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৬৪০২টি ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছিলেন বিজয়মোহন বিড়লা। তাঁকে কে আশীর্বাদ করেছিলো, জানা যায়নি।
আরেকটি বিজ্ঞাপনের উল্লেখ আমরা পাই। সেটি হলো স্বদেশীদের দ্বারা প্রস্তুতকৃত ‘গডরেজ’ সাবানের বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনটি প্রথম প্রকাশিত হয় ইংরেজি দৈনিক দ্য অ্যাডভান্স– এ। সেখানে বিজ্ঞাপনের ভাষাটি ছিলো
Godrej’s is Toilet Soaps/ High Class Swadeshi Soaps/
“The best in the World’ Poet Rabindranath Tagore speaks ‘highly of our soaps’. ১৬
পরে বিজ্ঞাপনটি আনন্দবাজারেও প্রকাশিত হয়েছিলো। সেখানকার ভাষ্য-
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, ‘গডরেজ সাবানের অপেক্ষা ভালো কোনো সাবান আমার জানা নাই। আমি ভবিষ্যতে শুধু এই সাবানই ব্যবহার করিব স্থির করিয়াছি। ১৭
১৯৬০ সালে দেশ সাহিত্য সংখ্যা থেকে আরেকটি বিজ্ঞাপনের সন্ধান পাওয়া যায়; এটি হলো ‘কাজলকালী’র বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনের ভাষাটি ছিলো-
কাজলকালী ব্যবহার করে সন্তোষ লাভ করেছি, এর কালিমা বিদেশী কালীর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়- ইতি ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩০, শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৮
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আমরা ‘কুন্তলীন’ তেলের বিজ্ঞাপন পড়েছি। এই ‘কুন্তলীন’ তেলের বিজ্ঞাপনের মূল কেন্দ্রই হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই তেলের প্রস্তুতকারক ছিলেন কোলকাতার ৫২ নং আমহার্স্ট স্ট্রিটের এইচ বোস পারফিউমারি। ১৯৩৩ এর ৬ আগস্ট দ্য অ্যাডভান্স পত্রিকায় আমরা যে বিজ্ঞাপন দেখি, তা হলো-
Dr. Tagore says: We have been trying your KUNTALINE for about two months. A relation of mine was long suffering from falling off of the hair. But new hair began to grow on the head within a month’s use of KUNTALINE. It is perfumed oil and its fragrance does not deteriorate after. Rabindranath Tagore.
Sweet, Lily, Rose, Jusmin, Violet etc. H. Bose Perfume 52, Amherst Street, Calcutta. ১৯
প্রবাসীতে যে বিজ্ঞাপন পাই কুন্তলীনের, সেখানে এইচ বোসের স্তুতি করে রবীন্দ্রনাথের খানিক ছন্দোবদ্ধ পদও আমরা পাই। সেখানে উল্লেখ আছে-
কুন্তলীনের গুণে মুগ্ধ হইয়াই কবি গাহিয়াছেন:
কেশে মাখো কুন্তলীন/রুমালেতে ‘দেলখোস’/ পানে খাও ‘তাম্বুলীন’/ ধন্য হউক এইচ বোস। ২০
কুন্তলীনের বিজ্ঞাপনের মতোই ছিলো রেডিয়াম ল্যাবরেটরির ‘রেডিয়াম স্নো’- এর বিজ্ঞাপন। এ বিজ্ঞাপন নিয়ে একটি মজার ঘটনা আছে। ১৯৮১ সালে ‘জয়শ্রী’ পত্রিকার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত ‘জয়শ্রী সুবর্ণজয়ন্তী সাধারণ সংখ্যা’য় শকুন্তলা রায়ের একটি প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, এক সময় এই মর্মে বিজ্ঞাপন প্রচারিত হতো যে, কবি নিজে স্নো ব্যবহার করেছেন। প্রবন্ধের উল্লেখযোগ্য খানিক অংশ তুলে ধরছি।
একবার ঢাকা থেকে ‘জয়শ্রী’ পত্রিকার জন্য লেখা সংগ্রহ করতে আমরা কবিগুরুর কাছে যাই। আমাদের দেখে উনি খুব আনন্দিত হয়ে বললেন- তোমরা তো জয়শ্রী। ঢাকা থেকে এখানে এসে উপস্থিত হয়েছো? তারপর কিছুক্ষণ নানা বিষয়ে কথা বলবার পর আমাদের উদ্দেশ্য জানাতে উনি বললেন- সে তো তোমাদের দেখেই বুঝতে পেরেছি।
কিন্তু কবিগুরু খুব ক্লান্ত আর লেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আমাদের লেখা দিতে পারলেন না। শেষকালে আমাদের হতাশ মুখের ভাব দেখে কি মনে হলো, তিনি বললেন- খালি হাতে ফিরে যাবে, এইটে নিয়ে যাও।
এক বাক্স ‘রেডিয়াম স্নো’- গোটা কতক শিশি হবে- তিনি আমাদের হাতে তুলে দিলেন। বললেন- এটা সবাই মিলে মেখো। আমি তো এসব ব্যবহার করি না। আমি বললাম- কিন্তু আমি তো দেখেছি আপনি ওদের বিজ্ঞাপনে লিখে দিয়েছেন যে, আপনি এগুলো ব্যবহার করেন। ব্যবহার না করে লিখলেন কি করে?
উনি একটু হেসে বললেন- দুটো লাইন লিখে দিলে আমার ভিক্ষের ঝুলিতে কিছু টাকা পাওয়া যাবে যে!২১
বিষয়টি আসলে মজার কি! রবীন্দ্রনাথকেও লিখতে হয়েছিলো টাকার জন্য। দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছিলো তাঁর স্বপ্নের শান্তি নিকেতনের জন্য। শুনতে মন্দ শোনালেও, রবীন্দ্রনাথকেও মিথ্যে কথা লিখতে হয়েছিলো কেবলই অর্থের জন্যই। এসবে অস্বাভাবিকতা নেই, কারণ রবীন্দ্রনাথও সবকিছুর পর একজন মানুষ। মানবিক চিন্তা-চেতনা, সীমা-সীমাবদ্ধতা, সবকিছু তাঁর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য- সমানভাবেই। যে চোখ দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে আমরা দেখি, সে চোখটা যেনো হয় মানুষকে দেখার চোখ। ঈশ্বরকে দেখার চোখ দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে দেখতে গেলে অপ্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু দেখার চিরাচরিত অভ্যেসে রবীন্দ্রনাথ চলে যাবেন মার্জিনের বাইরে।
আমার গোটা জীবনে রবীন্দ্রনাথ যেটুকু প্রাসঙ্গিক, তা আমার আটপৌরে দীনতা আর লোকাল বাসে ঝুলতে থাকা শূন্যতা দিয়েই বিচার্য। সেমিনারের রবীন্দ্রনাথ আমার নন। ছায়ানটের রবীন্দ্রনাথও আমার নন। আমার রবীন্দ্রনাথ লিখতেন, পড়তেন, ভালোবাসতেন, চুমু খেতেন, শিহরিত হতেন, মিথ্যে বলতেন, প্রেম করতেন, ইন্দিরা দেবীকে লেখা চিঠি মৃণালিনী দেবীর কাছে লুকোতেন এবং বিজ্ঞাপনও করতেন। বেঁচে থাকলে তিনি ফেসবুকও চালাতেন, ডিএসএলআর গলায় ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াতেন, মধ্যরাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানলার ধারে বসে নিঃসন্দেহে সিগারেট টানতেন।
সেমিনার-সিম্পোজিয়াম-ছায়ানট কিংবা কেতাবি রবীন্দ্রনাথ তো ওই পঁচিশে বৈশাখ আর বাইশে শ্রাবণের। আমার রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনের, প্রতিক্ষণের, প্রতিমুহূর্তের।
তথ্যসূত্র
১. সমরেশ্বর বাগচী রবীন্দ্র সাহিত্য ও সৃষ্টির নানা বিষয়ে সবিশেষ আগ্রহী। রবীন্দ্রচর্চা ভবনের সক্রিয় সদস্য এবং রবীন্দ্র বিষয়ক নানা প্রবন্ধ রচনায় অক্লান্ত। তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো রবীন্দ্রনাথ ও মানবেন্দ্রনাথ।
২. “সঙ্গীত, অভিনয় ও চলচ্চিত্র, রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ”, আনন্দবাজার, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৭১।
৩. রবিজীবনী, প্রশান্ত কুমার পাল, নবম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৭।
৪. আনন্দ সংবাদ, রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ, আনন্দবাজার, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৯৫।
৫. নানা কথা, রবীন্দ্রজীবনী, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৫৬।
৬. রবীন্দ্র প্রসঙ্গ, আনন্দবাজার, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ২০০।
৭. সঙ্গীত, অভিনয় ও চলচ্চিত্র, রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ, আনন্দবাজার প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ২০১।
৮. পূর্ণ থিয়েটার, রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ, আনন্দবাজার, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ২১৯।
৯. প্রাগুক্ত
১০. জন্মোৎসব, রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ, আনন্দবাজার প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৮১।
১১. সঙ্গীত, অভিনয় ও চলচ্চিত্র, রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ, আনন্দবাজার দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৬৫।
১২. বিবিধ প্রসঙ্গ, রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ, আনন্দবাজার প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৫৯৩।
১৩. বিজন ভট্টাচার্য ছাত্রাবস্থাতেই যুক্ত হন স্বদেশি আন্দোলনে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তাঁর মাতুল প্রখ্যাত সাংবাদিক সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার কর্তৃক অরণি পত্রিকা প্রকাশিত হলে সেখানে তাঁর গল্প লেখা শুরু হয়। সমকালেই খ্যাতিমান মার্কসবাদী রেবতী বর্মণের লেখা পড়ে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি তিনি আকৃষ্ট হন। আনন্দবাজার পত্রিকায় রেবতী বর্মণের লেখার সমালোচনা লেখেন এবং সংস্পর্শে আসেন কমিউনিস্ট নেতা মুজফ্ফর আহমদের। ১৯৪২-৪৩ সালে সদস্যপদ লাভ করেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির। ১৯৪৪ সালে আনন্দবাজারের চাকরি ছেড়ে পার্টির হোলটাইমার হন। তাঁর বিখ্যাত নাটক নবান্ন। নবান্নের প্লট সম্পর্কে নাট্যকার নিজেই বলেছেন –
একদিন ফেরার পথে কানে এলো, পার্কের রেলিঙের ধারে বসে এক পুরুষ আর এক নারী তাদের ছেড়ে আসা গ্রামের গল্প করছে, নবান্নের গল্প, পুজো-পার্বণের গল্প। ভাববার চেষ্টা করছে তাদের অবর্তমানে গ্রামে তখন কি হচ্ছে? আমারও মনে পড়ে গেলো সেই বউবাজার স্ট্রিটের মেলার কথা। দুই আনা দিয়ে টিকিট কিনে ঘুরে দেখলাম কত্তোকিছু। তখন দিন ছিলো, এখন নেই। ওদেরও নেই, আমারও নেই।
১৪. রবীন্দ্র রচনাবলী, অষ্টম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩০১।
১৫. অমৃতবাজার পত্রিকা, অক্টোবর ১৩, ১৯৩৬, পৃষ্ঠা: ৭।
১৬. দ্য অ্যাডভান্স, জানুয়ারি ৭, ১৯৩৭, পৃষ্ঠা: ১৩।
১৭. বিবিধ প্রসঙ্গ, রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ, আনন্দবাজার, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৫৮৭।
১৮. দেশ সাহিত্য সংখ্যা ১৩৬৭ (১৯৬০), পৃষ্ঠা: ৭৩।
১৯. দ্য অ্যাডভান্স, ০৬.০৮.১৯৩৩, পৃষ্ঠা: ১৯।
২০. প্রবাসী, জ্যৈষ্ঠ ১৩৫২, পৃষ্ঠা: ১৩৬।
২১. জয়শ্রীর আদিপর্ব, জয়শ্রী সুবর্ণ জয়ন্তী সঙখ্যা (সাধারণ), পৃষ্ঠা: ১৭।