বাঙলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে যেভাবে ভাবা উচিত ছিলো, সেভাবে ভাবা হয়নি- এ কথাগুলো দেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই আমরা শুনে আসছি। কিন্তু এই ‘শুনে আসার’ মধ্যেও কেটে গেছে চল্লিশটি বছর, এখনও এক সত্যিকারের শিক্ষাকাঠামো জাতিকে উপহার দিতে পারেননি কোনো সরকার। অথচ স্বাধীনতার পরপরই যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিলো, তা শিক্ষা। বিজয় অর্জণের মাসেই বাংলাদেশে ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে শিক্ষানীতির খসড়া করার ইতিহাস আমাদের সবারই জানা। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সে বিষয়টির সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত ছিলেন।
দেশ স্বাধীন হবার পর একমাত্র বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নই শিক্ষানীতি সম্বন্ধে একটি ভাবনা তৈরি করে কেননা তারা বুঝতে পেরেছিলো অতীতের শিক্ষা-কাঠামো এবং নীতিগুলো জনসম্পৃক্ত বা জনগণতান্ত্রিক নয়। এত শিক্ষা আমাদের কাছে একটি অসহিষ্ণু বোঝা এবং সকল অর্থেই জাতি হিসেবে আমরা এখনো অজ্ঞ। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে আমাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় কাঠামোর আবির্ভাব ঘটেছে। সেই শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো কেরানী বানানো। তারা তাদের শোষণ বৈষম্য পাকাপোক্ত করতো ডিগ্রি দিয়ে। মুক্তবুদ্ধি, স্বাধীন ও বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা থেকে জনসাধারণকে দূরে রেখে ব্রিটিশরা যে কাঠামোর শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলন ঘটিয়েছিলো তার নব-সংস্করণ আমরা পাই পাকিস্তান আমলেও। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান শিক্ষা কনফারেন্সের সুপারিশমালা এবং ১৯৫৬, ১৯৬২ ও ১৯৬৪ সালের শিক্ষা কমিশন রিপোর্টে তার স্পষ্ট প্রতিফলন পাওয়া যায়।
বাঙালির আত্মজ সত্তায় স্বাধিকারের সাথে শিক্ষার এমন এক সম্বন্ধ ছিলো যার চরম পরিণতি পাকিস্তান নামক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রকে প্রত্যাখ্যান করে সার্বভৌম বাঙলাদেশ প্রতিষ্ঠা। বাঙলাদেশে সংবিধানের আলোকে যে শিক্ষা দর্শন গৃহীত হয়েছিলো, তা পরবর্তীকালে শাসক গোষ্ঠীর বারবার পরিবর্তনের ফলে একেবারেই বদলে গেছে। ১৯৭২ সালের ২৬ জুলাই গঠিত ড. কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনে মুক্তিযুদ্ধের দর্শন প্রতিফলিত হয়েছিলো। এতে বলা হয়েছিলো জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সুস্পষ্ট বোধ শিক্ষার্থীর চিত্তে জাগ্রত করে তাকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম লক্ষ্য। সংবিধানের চার মূলনীতির আলোকে জাতিগত, ধর্মীয়, সম্প্রদায়গত ও শ্রেণিগত নিপীড়নমুক্ত এবং বৈষম্যহীন একটি সমাজ গড়ার জন্য এই প্রতিবেদনকে সম্ভাবনাময় হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
এরপর বুড়িগঙ্গার জল বহুদূর গড়িয়েছে- কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সে-ই শিক্ষানীতি আমরা পাইনি। অথচ সকল সরকারের কর্তাব্যক্তিরাই বেশ জোর গলায় ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড’ কথাটির পুনুরাবৃত্তি করেন। তবে শুকনো কথায় যে চিড়া ভেজে না- এটা সরকারের কর্তাব্যক্তিরাও জানেন, হয়তো মানেন না- কিংবা কালেভদ্রে মানেন। তাই শিক্ষা- বিশেষত উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের যে দর্শনটি থাকা উচিত ছিলো তার কানাকড়িও নেই। এখন যা আছে তা পুরাকীর্তিবিশেষ। ঘটনাটি তলিয়ে দেখতে গেলে উচ্চশিক্ষার রূপকাঠামোকে তুলে আনতে হবে এবং কী হবার কথা ছিলো আর কী হচ্ছে- সে বিষয়টির একটা সামগ্রিক মূল্যায়ন উপস্থাপন জরুরি। কিন্তু উচ্চশিক্ষার দর্শনগত আলোচনায় যাবার আগেই আমাদের হোঁচট খেতে হয়। বাঙলাদেশের সর্ববৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যদি এই উচ্চশিক্ষার সার্বিক দিকের আলোচনার কাঠামো নির্মাণ করি তবে দেখা যায়- এর গুরুত্ব অধিক হলেও, তার প্রতি অবহেলা কম নয়। ফলে আলোচনার আঁতুরঘরেই নিহত হয় আলোচনার সম্ভবনা। কেবল শিক্ষা কার্যক্রমের বিচারে নয়; জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে জড়িত আছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং এরই ধারায় একদিকে যেমন রয়েছে সম্ভাবনা, তেমনি রয়েছে সঙ্কট। বহুবার এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নানা ভাঙাগড়ার মিথোলজি রচিত হয়েছে। এর কতোটা সরকারের স্বার্থে, কতোটা প্রশাসনের স্বার্থে আর বাকিটা ব্যক্তিস্বার্থে- কিন্তু কোথাও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষিত হযনি। কখনো ভাবা হয়নি এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের কথা। অথচ এর প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিলো ‘শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন’।
১৯৯২ সালের ২১ অক্টোবর জাতীয় সংসদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকল্পে যে আইন অনুমোদন লাভ করে, তাতে এটি প্রতিষ্ঠার পরিপ্রেক্ষিত প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-
.. ..যেহেতু কলেজ শিক্ষার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান ও পাঠ্যসূচীর আধুনিকীকরণ ও উন্নতিসাধন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা বৃদ্ধিসহ কলেজের যাবতীয় বিষয় ও ব্যবস্থাপনার দাযিত্ব একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ন্যস্ত করা সমীচীন ও প্রয়োজন.. ..
উল্লিখিত অংশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কারণটি লিপিবদ্ধ হয়েছে। সুতরাং এটা সহজেই অনুমেয় যে, সে সময় ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কার্যক্রম চলতে থাকা অধিভুক্ত সারাদেশের কলেজসমূহকে স্বতন্ত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে দেয়া বিশেষ দরকার ছিলো। হয়তো এর প্রধান কারণ ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদের যোগ্যতার ও সংখ্যার তারতম্য, অবকাঠামো ও উপকরণের সুযোগ সুবিধাগত বৈষম্য, প্রশাসনিক জটিলতা এবং অপ্রত্যাশিত সেশনজট।এই উদ্যোগের লক্ষ্য যে ইতিবাচক ছিলো- সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এতো বছরেও সে-ই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি পৌঁছতো পারেনি। তাই বর্তমানে নানা সময়ে এ সংক্রান্ত নানা আলোচনা শোনা যায়। এই আলোচনা কতোটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে আর কতোটা কেবল আলোচনার জন্যেই- তা নির্ণয় করা বড়ো শক্ত।
সাম্প্রতিক কয়েকটি সংবাদে জানা গেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নাকি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারছে না। বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বসার আগেই যে অবয়বটি ভেসে উঠে তা হলো বিশ্ববিদ্যালয় আক্ষরিক অর্থে কোন ধরণের বিষয়কে প্রতিনিধিত্ব করে। কেবল অবকাঠামোগত বিষয়কেন্দ্রীকতাকে বিশ্ববিদ্যালয় বলা যায় না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের এমন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে মেধাবী শিক্ষার্থীরা নানা স্রোতে এসে মিলিত হয়। সুতরাং এই মেধাবী স্রোতটি কাজে লাগানোর সুযোগ ছিলো। কিন্তু সেই সুযোগটি যে কাজে লাগছে না- এর দায়ভার সম্পূর্ণরূপে কর্তৃপক্ষের- বৃহৎ অর্থে সরকারের। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্টার, কলেজ পরিদর্শক, গ্রন্থাগারিক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অর্থ ও হিসাব পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক, এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী। আর সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষসমূহ- সিনেট, সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও বিভিন্ন বোর্ড। অতএব ‘লক্ষ্যে পৌঁছতে না পারার’ দায়ভার একটি সামষ্টিক ব্যবস্থার উপরে।
এর পেছনের ইতিহাস আরও করুণ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রালগ্ন থেকে প্রায় আট বছর কোনো নূতন শিক্ষক নেয়া হয়নি- ফলে এখনও এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক সল্পতায় ভুগছে। এর সিনেট-সিন্ডিকেটসহ গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোতে শিক্ষকদের তেমন কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই; অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের অতি প্রয়োজনীয় অ্যাকাডেমিক মনিটরিং এ বিরাজ করছে বিপুল স্থবিরতা। উপ-উপাচার্যের একাধিক পদ থাকলেও অধিকাংশ সময়েই দায়িত্ব পালন করছেন একজন উপ-উপাচার্য। কোষাধ্যক্ষের পদ শূন্য ছিলো প্রায় দেড় বছর, গত ৫ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনটি ডিন পদের দুটি অধিকাংশ সময়েই ছিলো শূন্য। বর্তমানে ডিন, রেজিস্টার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অর্থ ও হিসাব পরিচালক পদে কর্তব্যরতরা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এইসব জগাখিচুড়ি মার্কা নিয়োগ এবং নসিমন মার্কা প্রশাসনের দায় কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের? এ প্রতিকূলতা মোকাবেলায় সরকার, শিক্ষামন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদৌ কী কোনো উদ্যোগ হাতে নিয়েছে?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হলো দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে কোনো আবাসিক সুবিধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ধারা ১২ (১) এ বলা হয়েছে-
ভাইস-চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক একাডেমিক ও প্রশাসনিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন
ধারা ১৫ অনুযায়ী,
রেজিস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক কর্মকর্তা হইবেন
কিন্তু প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি উপাচার্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জরুরি আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর সতেরো বছরে পাঠদান ও ডিগ্রি প্রদানের বিষয় সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দেড়গুণ আর অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান আর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় পাঁচগুণ। কিন্তু সে অনুযায়ী বাড়েনি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজের শিক্ষক সংখ্যা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং অন্যান্য শিক্ষা ও সহ-শিক্ষাবিষয়ক অগ্রগতি। কলেজ প্রতিষ্ঠা, বিষয় অধিভুক্তি, আসনবৃদ্ধি প্রভৃতি ঘটনায় সরকার এবং রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিবর্গের প্রভাব নানাভাবে ক্রিয়াশীল।
কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে মেধাকে সুস্থিতিশীলভাবে লালন করার রাস্তাটি অতিক্রম করা সহজ ছিলো। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের একটা বৃহৎ সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্যে আসেন এবং তারা তাদের মেধা ও মননের স্বাক্ষর রাখার প্রয়াস পেলে নিঃসন্দেহে একটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারবেন। এতো বৃহৎসংখ্যক শিক্ষার্থীর মেধাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না কেবল অব্যবস্থাপনার কারণে, রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারণে- সর্বোপরি শাসকগোষ্ঠীর নির্লজ্জ ভণ্ডামির কারণে। এতে একদিকে যেমন ব্যহত হচ্ছে শিক্ষার যাত্রা, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন। কিন্তু কুম্ভকর্ণ কর্তৃপক্ষের ঘুম আর ভাঙে না!
ঘুম যে ভাঙে না- একথাও ঠিক নয়। কারণ সাদা চোখে দেখলেও দেখা যায় দুর্নীতির বিভিন্ন পর্যায়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নানা জনে নানা রকমে অবস্থান করছে। অর্থাৎ ‘তাহারা জাগিয়া ঘুমায়’। স্ব-অর্থায়নে পরিচালিত একটি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও স্বায়ত্ত্বশাসন অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর অন্তর্ভুক্ত নয়; এ বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যাথা নেই- কিন্তু বদলি বাণিজ্য, দলীয়করণ, হয়রানি সিন্ডিকেট ঠিকই চলছে। সারাদেশের কলেজসমূহের সাপ্তাহিক ছুটি একদিন থাকলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দুইদিন বন্ধ থাকায় বাড়ছে প্রশাসনিক মন্থরতা। লাল ফিতার রিলে রেসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ প্রায় অচল হবার দশা। শিক্ষার আধুনিকায়নের সুর তো বহু দূরের কথা, সেখানে শিক্ষা যে মৌলিক অধিকার এই বোধটুকু প্রশাসন মানতে নারাজ।
অথচ আবারও স্মরণ করিয়ে দিই- এই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ই হলো দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে অজস্র শিক্ষার্থীর মেধা ও শিক্ষাজীবন সন্নিবেশিত। নানাদিক থেকেই এর গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা আজ সময়ের এবং উচ্চশিক্ষার প্রতিটি স্তরে লক্ষ্যণীয়। সুতরাং এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে সবাইকেই। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনও যদি মনে করে এটা নিয়ে ভাবার সময় তাদের আসেনি, কিংবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব যদি এখনও তারা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন- তবে বলতে হবে এখন আর সরকার নেই, আছে ‘কানার হাটবাজার’। একথা নিঃসন্দেহে সত্য- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের মেধাকে সত্যিকারের উচ্চশিক্ষার পথে পরিচালিত করতে পারলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ধারণার সামগ্রিক বাস্তবায়ন ঘটানো গেলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পোট্রেটটা আরও সুন্দর করা যেতো।