১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের মূলকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। তাই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ বা ‘বাঙালি এথনিক ক্লিনজিং’ শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে। ওইদিন সকালবেলা একটি সামরিক হেলিকপ্টারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল জানজুয়া, মেজর জেনারেল মিঠঠা খান, মেজর জেনারেল নজর হোসেন শাহ এবং মেজর জেনারেল ওমর রংপুর, রাজশাহী, যশোর, চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে ‘অপারেশন প্ল্যান’ করে এবং পাকিস্তানি কমান্ডারদের দিয়ে আসে। ঢাকায় প্রধান টার্গেট ছিল ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা ইপিআর হেডকোয়ার্টার্স এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইন। জানোয়ার ইয়াহিয়া খান প্রেসিডেন্ট হাউস (পুরনো গণভবন) ত্যাগ করে যায় বিকেল ৫ টা ৪৫ মিনিটে। সে গোপনে বিমানযোগে কলম্বো হয়ে সরাসরি করাচি যাত্রা করে। এটাই ছিল তার শেষ ঢাকা সফর।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙালিদের ওপর যে বর্বর হামলা চালায় তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। সারা বাংলাকে তারা শ্মশানে পরিণত করেছিল। ১৯৭১ সালের শেষের দিকে যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জানলো তখন তারা এদেশের সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মীদের হত্যা করতে শুরু করে। এই কাজে পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্য করে আল-বদর, আল-শামস, রাজাকাররা।
তবে ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালেই বর্বরভাবে হত্যা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শিক্ষকগণকে। এই পোস্টে আমি চেষ্টা করবো ১৯৭১ সালের ২৫-২৭ মার্চের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষকগণ পাকিস্তান বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের সম্পর্কে লিখতে।
দর্শন বিভাগ: অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব
সিলেটের লাউতা গ্রামে ১ জানুয়ারি ১৯০৭ সনে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ঈশ্বরচন্দ্র দেব। সিলেটের বিয়ানীবাজার স্কুল থেকে প্রবেশিকা (১৯২৫) এবং কলকাতা রিপন কলেজ থেকে আই. এ (১৯২৭) পাশ করেন। সংস্কৃত কলেজ থেকে দর্শনে অনার্সসহ বি. এ (১৯২৯), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ (১৯৩১) ডিগ্রী লাভ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে (১৯৪৪) রিজন, ইনটুইশন এন্ড রিয়েলিটি থিসিসের জন্য পি.এইচ.ডি ডিগ্রী প্রদান করে। কর্মজীবন শুরু করেন প্রথমে কলকাতা ও পরে দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে। ১৯৫৩ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের লেকচারার পদে যোগ দেন। ১৯৬৭ সালে তিনি বিভাগীয় প্রধান হন। তিনি ১৯৫৭ সনের জুলাই মাস থেকে ১৯৭০ এর এপ্রিল পর্যন্ত জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। কিছুদিন যুক্তরাষ্ট্রের উইলকসবার কলেজে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। সেই সময়ে ‘দি গোবিন্দ দেব ফাউন্ডেশন ফর ওয়ার্ল্ড ব্রাদারহুদ’ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয় (১৯৬৬)। পরে তিনি ঢাকা দর্শন ভবন স্থাপন করেন। সারস্বত সমাজ ১৯৬১ সনে তাঁকে ‘দর্শন সাগর’ উপাধি দেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে- এ নিউ ডিফেন্স এন্ড এ নিউ অ্যাপ্লিকেশন (১৯৫৮), আসপিরেশন অব দ্য কমন ম্যান (১৯৬৩), আমার জীবন দর্শন (১৯৬৭), তত্ত্ববিদ্যা-সার (১৯৬৬), বুদ্ধ: দ্যা হিউমানিস্ট (১৯৬৯)। পাকিস্তানি বাহিনী এই বিদ্বান মানুষটি হত্যা করে ২৫ মার্চ রাতে তাঁর বাসভবনে (শিববাড়ি সংলগ্ন)।
পরিসংখ্যান বিভাগ: ড. এ. এন. এম. মুনিরুজ্জামান
যশোর জেলার কাঁচেরকোল গ্রামে ১৯২৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মুহম্মদ মুসা। ১৯৪০ সনে নড়াইল এসডি হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা, কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আই.এস.সি (১৯৪২) ও গণিতে বি.এস.সি আনার্স (১৯৪৪) ডিগ্রী লাভ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে এম.এস.সি ডিগ্রী লাভ করেন ১৯৪৬ সনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে ১৯৪৮ সালে লেকচারার পদে যোগ দেন। রিডার পদে উন্নীত হন ১৯৬১ সনে। ২৫ মার্চের রাতে শহীদ মিনার সংলগ্ন ৩৪ নং বাড়িতে পরিবারের আরও তিনজন সদস্যের সঙ্গে তাঁকে হত্যা করা হয়।
ইংরেজী বিভাগ: ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা
ময়মনসিংহ শহরের বড়বাসায় ১০ জুলাই ১৯২০ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কুমুদ চন্দ্র গুহঠাকুরতা। ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (১৯৩৬) এবং আনন্দমোহন কলেজ থেকে আই.এ (১৯৩৯) পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে বি.এ (১৯৪২) এবং এম.এ (১৯৪৩) ডিগ্রী লাভ করেন। লন্ডন কিংস কলেজ থেকে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী লাভ করেন ১৯৪৭ সনে। আনন্দমোহন কলেজ, গুরুদয়াল কলেজ এবং জগন্নাথ কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৪৯ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে লেকচারার পদে যোগ দেন। ১৯৬৮ সনে রীডার পদে উন্নীত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর পি.এইচ.ডি থিসিস- ক্ল্যাসিক্যাল মীথস ইন দ্যা প্লেজ অব সুইনবার্গ, ব্রিজেস, স্টার্জ মুর এন্ড এলিয়েট গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন। তিনি নিহত হন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে। ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালে তিনি গুলিবিদ্ধ হন নিজ বাসভবনের সামনে (শহিদ মিনার সংলগ্ন ৩৪ নং বাড়ি) এবং ৩০ মার্চ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগ: ড. ফজলুর রহমান খান
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার কাজিয়াটি গ্রামে ২ মার্চ ১৯৩৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম আব্দুল হাকিম খান, মা ফিরোজা খাতুন। মোহনগঞ্জ হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা (১৯৫৪) এবং আনন্দমোহন কলেজ থেকে আই এস সি (১৯৫৬) পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএসসি (১৯৬০) এবং মাটির লবণাক্ততা (Soil Salinity) বিষয়ে এমএসসি (১৯৬২) ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরের বছর উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডন যান এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইম্পিরিয়াল কলেজের ড. এ এইচ কর্নফিল্ডের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি শুরু করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিলো- A Study on the Nutrient Metabolism in soil at High Moisture Level. ১৯৬৮ সালে পিএইচডি শেষে তিনি ফিরে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭১ সালে ড. ফজলুর রহমান থাকতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত আবাসিক এলাকার আবাসিক শিক্ষক ভবনের তৃতীয় তলার পূর্বদিকের ২৩/এফ ফ্ল্যাটটিতে। পঁচিশে মার্চ রাতে এই ভবনেই পাকিস্তানের বর্বর সেনাবাহিনী তাঁকে হত্যা করে। শুধু তাঁকেই নয়, তাঁর সঙ্গে তাঁর কলেজ পড়ুয়া ভাগ্নে কাঞ্চনও গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন।
গণিত বিভাগ: জনাব শরাফত আলী
কুমিল্লা জেলার সদর থানার দক্ষিণ রামপুর গ্রামে ১ জুলাই ১৯৪৩ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আলী আজম এবং মাতা রজবেন্নেসা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রবেশিকা (১৯৬০) এবং ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই.এস.সি (১৯৬২) পাস করেন। একই কলেজ থেকে ১৯৬৪ সনে বি.এস.সি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সনে গণিতে এম.এস.সি ডিগ্রী লাভ করেন। পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য তিনি আচার্য স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে লেকচারার পদে যোগ দেন। ঢাকা হলের (বর্তমান শহীদুল্লাহ হলের) সহকারি হাউস টিউটরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৯৭০ সালে। পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ২৫ মার্চ রাতে শহীদুল্লাহ হলের শিক্ষকদের আবাসিক এলাকায় শহিদ হন। তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় আরও অনেকের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাঁকে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
ভূতত্ত্ব বিভাগ: জনাব মুহম্মদ আবদুল মুকতাদির
সিলেটের সিলাম গ্রামে ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৌলভী আবদুল জব্বার এবং মায়ের নাম বেগম মোশাহেদা খানম। আব্দুল মুক্তাদির সিলাম চকবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৪৮ সালে সিলাম জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে তিনি রাজা জি. সি. উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি সিলেট মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে আই. এসসি পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূতত্ত্বে এম.এস.সি (১৯৬২) এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা লাভ করেন (১৯৬৭)। কিছুদিন সহকারি ভূতত্ত্ববিদ হিসেবে পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন সংস্থায় চাকুরি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন ১৯৬৪ সনে। মুহম্মদ আবদুল মুকতাদির থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার ১২ নম্বর ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে। একাত্তরের ২৫ মার্চের সেই কালরাতে তিনি গর্ভবতী স্ত্রীসহ নিজ ফ্ল্যাটেই ছিলেন। মধ্যরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালায়। গোলাগুলি প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গেলে তিনি ওই ভবনেরই তিনতলার একটি ফ্ল্যাটে আশ্রয় নেন। সকালে সেনারা ওই ফ্ল্যাটে এসে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ: জনাব আতাউর রহমান খান খাদিম
ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আখাউড়া থানার খড়মপুর গ্রামে ১৯৩৩ সালে তাঁর জন্ম। পিতা দৌলত আহমদ খান খাদিম ছিলেন ঢাকা হাইকোর্টের আইনজীবী। মাতা আঞ্জুমান্নেসা খাতুন। আতাউর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জর্জ এইচ.ই স্কুল থকে ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আই.এস.সি পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে বি.এস.সি (সম্মান) এবং ১৯৫৪ সালে এম.এস.সি ডিগ্রি লাভ করেন। আতাউর রহমান খান ১৯৫৫ সালে ফিলিপস ইলেকট্রিক কোম্পানিতে বিদ্যুৎ প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি পশ্চিম জার্মানির গেটিনজেনে তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা ইনস্টিটিউটে বৃত্তিপ্রাপ্ত গবেষক হিসেবে অধ্যয়ন করেন (১৯৫৯-৬০)। দেশে ফিরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে গবেষণা ফেলো হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক পদে যোগদান করেন। আতাউর রহমান পরীক্ষণ পদার্থবিজ্ঞান বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্সে যেমন বিশেষজ্ঞ ছিলেন, তেমনি তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায়ও ছিলেন অনন্য। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ শহীদুল্লাহ হলের আবাসিক শিক্ষক ভবনে পাকিস্তানি বর্বর সেনাবাহিনী তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান: শ্রী অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য
সিলেটের সৈয়দগঞ্জে জন্তারী গ্রামে (নবীগঞ্জ) ৩১ জানুয়ারি ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা দ্বিগেন্দ্র চন্দ্র ভট্টাচার্য এবং মাতা রাজলক্ষ্মী দেবী। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় অনুদ্বৈপায়ন নবীগঞ্জ কে. জি. হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা (১৯৬১) এবং সিলেটের এম. সি কলেজ থেকে আই.এস.সি (১৯৬৩) পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় বি.এস.সি অনার্স (১৯৬৬) এবং ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে এম.এস.সি (১৯৬৭) ডিগ্রী লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞানের লেকচারারের পদে যোগ দেন ১৯৬৮ সনে। পরের বছর জগন্নাথ হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষকের দায়িত্ব লাভ করেন। ছাত্রজীবনের কৃতিত্ব আর পেশাগত জীবনের দক্ষতার কারণে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছিলেন অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ লন্ডনের ফ্লাইট ধরার কথা ছিল। সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বর সেনাবাহিনীর হাতে এই মানুষটি নিহত হন জগন্নাথ হলে।