বাংলাদেশজুড়ে ছড়িয়ে গেছে শাহবাগ

আজ থেকে দশ বছর আগে- ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি- সব যুদ্ধাপরাধীকে সর্বোচ্চ শাস্তি ও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে এক ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের সূচনা হয়েছিল শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে। ১৯৭১ সালের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধে বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে বর্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরিচালিত জেনোসাইডে যে বাঙালি কুলাঙ্গাররা প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত হয়েছিল, ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল বাংলার নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক ও…

হত্যার মদদদাতাদেরও আইনের আওতায় আনা হোক

চলতি মাসেই বাংলাদেশের আদালত থেকে দুটো গুরুত্বপূর্ণ রায় আমরা পেয়েছি। জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এবং এর ঠিক ৫ দিন পর ১৬ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড মামলার রায় দিয়েছে আদালত। দুটো রায়ই ঘোষণা করেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক জনাব মজিবুর রহমান।…

জাফর মুন্সী: শাহবাগ আন্দোলনের প্রথম শহিদ

রাজপথ থেকেই শেষ পর্যন্ত বন্ধু চিনে নিতে হয়, শেষ পর্যন্ত রক্ত দিয়েই নির্মিত হয় চিন্তার সাঁকো। ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে যখন দীপ্র দ্রোহে নির্মিত হচ্ছে প্রতিবাদের স্লোগান, দাবি আদায়ের ইস্পাতসম শপথ; তখন মতিঝিলের দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত জাফর মুন্সী জামাত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন একা। হায়েনাদের নির্মম নির্যাতনের শিকার…

মনীষার আলো: অভিজিৎ ভাবনা

সংশোধনী লেখাটি বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়েছিলো ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে। সেখানে অভিজিৎ রায়ের জন্মসাল ভুলবশত ১৯৭২ লেখা হয়েছিলো। এর দায়-দায়িত্ব লেখক হিশেবে আমারই। পরবর্তীতে আমার সহযোদ্ধারা এই ভুলটি আমাকে ধরিয়ে দেন কিন্তু বিডিনিউজের প্রকাশিত লেখায় সেটি আর সংশোধন করা হয়নি। এখানে সেটি সংশোধন করা হলো। এই মারাত্মক ভুলের জন্য আমি পাঠকের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।…

অভিজিৎ একটি নক্ষত্রের নাম

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে নির্মমভাবে নিহত হন বিজ্ঞান লেখক, প্রকৌশলী এবং মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম অভিজিৎ রায়। মৌলবাদীদের চাপাতির নির্মম আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান আরেকজন বিজ্ঞান লেখক– অভিজিৎ রায়ের জীবনসঙ্গী বন্যা আহমেদ। এরপর বছর জুড়ে চলে একের পর ব্লগার-লেখক-প্রকাশক ও মুক্তচিন্তকদের হত্যা। বইমেলা প্রাঙ্গণে, জনবহুল টিএসসি এলাকায়…

When Words Get You Killed

It is exactly four years ago when our fellow fighter Ahmed Rajib Haider was atrociously killed by Ansarullah Bangla Team, an offshoot organization of Islami Chhatra Shibir, the student wing of the Jamaat-e-Islam. In 2013 Shahbag movement was sparked and later forged ahead under its specific six point demands including the capital punishment of the…

রাজীব হায়দার: উদ্ভাসিত দীপের দ্যোতনা

২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল– পঞ্জিকার পাতা থেকে বেরিয়ে ভাবলে বুঝতে পারি, কতটা রক্তাক্ত মহাযাত্রার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পেরিয়ে এসেছে চারটি বছর। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি এবং জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধসহ সুনির্দিষ্ট ছয় দফা দাবির ভিত্তিতে ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া শাহাবাগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের বহু অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করে বাংলার মানুষ।…

অন্ধকার ভেঙেই যেতে হবে

২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর। আমাদের অভ্যাসগত স্তব্ধতা পুনরায় স্তব্ধ হয়েছিলো। অক্ষম আক্রোশ চেপে আমরা দেখছিলাম আক্রান্ত চিন্তাশীল ও প্রগতিকামী মানুষের সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে। একের পর এক নির্দয়ভাবে আক্রান্ত ও নিহত হচ্ছেন দেশের লেখক-ব্লগার-প্রকাশকসহ মুক্তচিন্তার মানুষেরা— বস্তুত, ধারালো অস্ত্রের নিচে আমরা দেখেছিলাম ক্ষত-বিক্ষত ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল। আজ প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যার এক বছর পেরিয়ে গেলেও…

যে মশাল দিয়ে গেছেন জাফর মুন্সী আর রাজীব হায়দার

আমাদের প্রাত্যহিক জীবন বসন্তের রঙে রঙিন হয়েও কী আশ্চর্য দ্রোহ টাঙিয়ে রাখে মধ্য ফেব্রুয়ারির সদর দরোজায়। কেবল রঙ কিংবা সঙ্গীতেই নয়; বসন্ত প্রাসঙ্গিক হয় মৃত্যু আর বিদ্রোহের কোলাজে, আমাদের নিয়ে চলে ইতিহাসের দায়মুক্তির সোপানে— ১৯৫২ আর ২০১৩ সালে। মধ্য ফেব্রুয়ারির গনগনে উনুনের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা টের পাই কয়েকটি জীবন গিয়েছে চলে, জীবনের তথাগত মানে ছাড়িয়ে…

টকের জ্বালায় দেশ ছাড়লাম, তেঁতুল তলায় বাস

লেখার শিরোনামটি আসলে আমাদের বর্তমান অবস্থারই একটি প্রবচনিক রূপ, সাম্প্রতিক বাঙলাদেশের চালচিত্র। ‘কোথায় দাঁড়িয়ে বাঙলাদেশ?’— এই প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। মনে হচ্ছে, আমরা প্রত্যেকেই যেনো বাস করছি একটি দুঃস্বপ্নের মধ্যে, ভয়াল মেঘমালার নিচে আমাদের ত্রস্ত চলন। ২০১৫ সালের অর্ধেকও শেষ হয়নি, অথচ তিনজন ব্লগার ও লেখককে হত্যা করা হলো নৃশংসভাবে। ২৬…

বিভ্রমটা কোথায়- দৃষ্টিতে, চিন্তায় না নৈতিকতায়?

এক সুসময় আর দুঃসময় হাত ধরাধরি করে হাঁটছে। খটকা লাগলো? মনে হলো, এটা কী করে হয়? হয়, কখনও কখনও হয়। যখন পুড়ে যায় সবকিছু, বিধ্বস্ত হয় সভ্যতার নিটোল ভিত্তি, তখন বৃষ্টির স্রোতেই তা সবুজ হয় আবার, গড়ে ওঠে মানুষের আবাস। তখন কেউ কেউ স্বস্তিবোধ করেন, আবার কেউ কেই আছেন, ভাবেন- এ আবার বানের লক্ষণ নয়…