রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতা

বর্তমান সময়টি ঐতিহাসিকভাবেই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে আমরা উদযাপন করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ, অন্যদিকে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে। এ সময়ের নানা নথিপত্র, রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ, খবরের কাগজের নানা লেখা নিঃসন্দেহে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নানা গবেষণার মূল্যবান আকর হয়ে থাকবে। তার ফলাফল বা প্রতিক্রিয়া কী হবে তা জানি না, তবে এগুলো…

Details

বিপন্নতাকে কৃষ্ণচূড়ায় পাল্টে ফেলার দশক

বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে গত শতাব্দীর ষাটের দশক এক অবিস্মরণীয় গণজাগরণের দশক। মূলত এই দশকের আলোতেই রচিত হয়েছিল বিংশ শতাব্দীর অলোকসামান্য ঘটনা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। পৃথিবীব্যাপী মুক্তিকামী মানুষের কাছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সর্বকালের এক অখণ্ড অনুপ্রেরণা। বাংলার মানুষের মুক্তিসংগ্রামের যে বীজ সাংস্কৃতিক ভূমিতে রোপিত হয়েছিল বিংশ শতাব্দীর প্রথম পর্বে, তার রাজনৈতিক বিকাশ প্রাপ্তির সময় হিসেবে চিহ্নিত…

Details

ব্যানারে ধর্ম, আড়ালে রাজনীতি

বাহাত্তরের সংবিধানে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কারণ ২৩ বছরের পাকিস্তানি শাসনামলে এই ধর্মকে ব্যবহার করেই বাংলার মানুষের ওপর নির্মম শোষণ আর নির্যাতন চালিয়েছে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী। একাত্তরে বর্বরতম জেনোসাইড চালিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আর তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসরা ধর্মের নামে এই জেনোসাইডকে সমর্থন জানিয়েছে। ধর্মের নামে রাজনীতি একটি জাতিকে যে কোথায় নামিয়ে আনতে…

Details

এই বাংলার ইতিহাস আপনারা জানেন না?

লেখার শিরোনামটি শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের দেয়া একটি সংবাদ শিরোনামের অংশ। ১৯৬৪ সালের ১৩ জুলাই দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রথম পাতা জুড়ে প্রকাশিত হয়েছিল ‘জুলুম প্রতিরোধ দিবসে’ আওয়ামী লীগের জনসমাবেশের একটি ছবি। জনসমুদ্রের সামনে বক্তব্য রাখছেন শেখ মুজিবুর রহমান। তার ঠিক উপরেই উদ্ধৃতিচিহ্নের ভেতরে দুটো কমা ও দুটো হাইফেন সহযোগে শিরোনাম নির্ধারণ করেছিলেন সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন। জনসভায় দেয়া…

Details

আওয়ামী লীগ, তুমি পথ হারাইয়াছো?

গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার বিএমএ মিলনায়তনে খেলাফত যুব মজলিশ ঢাকা মহানগরীর এক অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর নামে স্থাপিত প্রতিকৃতি-ভাস্কর্য নিয়ে যে ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য করেছে— তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ বা প্রতিক্রিয়া চোখে পড়েনি। আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী দলের…

Details

হেফাজতে ইসলাম: জামায়াতের আরেক রাজনীতি

বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হিসেবে হেফাজতে ইসলামের আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি। সংগঠনটি যে সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন সারা বাংলাদেশের চোখ ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দিকে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর পরিমার্জন, নানা মাত্রিক সংশোধন ও যুগোপযোগী করার কাজ চলছিল তখন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ২০১০…

Details

তেসরা নভেম্বর ও তিনটি রাজনৈতিক সমীকরণ

১৯৭৫ সালের পনেরোই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ৮০ দিন পরই কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় জাতীয় চারনেতাকে। ঘাতকচক্র, প্রেক্ষাপট, হত্যার ধরণ ও উদ্দেশ্য— সবই এক। পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট থেকে তেসরা নভেম্বর অব্দি সময়টি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক ভয়াবহ সময়। অন্যায়, অবিচার, খুনী ও ষড়যন্ত্রকারীদের দম্ভ— সব মিলিয়ে ওই ৮০ দিন…

Details

সবক্ষেত্রেই আইনের এমন তড়িৎ প্রয়োগ চাই

বিজয়া দশমীর দিনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ গণমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে। ঢাকা- ০৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ছেলে ও ৩০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করে মাদক ও অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোরও যথাযথ তদন্ত ও…

Details

ধর্ষণের বিচার ও ধর্ষণ-মনস্তত্ত্বের চিকিৎসা

একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশে। রাজপথ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, মূলধারার গণমাধ্যমসহ সবক্ষেত্রে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন মানুষ। করোনা মহামারীর সময়ে প্রতিটি সচেতন মানুষ যার যার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করছেন। ইতোমধ্যে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে অপরাধীদের। এই পর্যন্ত চিত্রটি আমাদের পরিচিত। ফেনীর নুসরাত জাহান রাফি বা কুমিল্লার সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের পরও একইভাবে সোচ্চার হয়েছিলেন…

Details

অনলাইনের বাংলাদেশ

এক সময় আমরা গাইতাম, ‘পৃথিবী বদলে গেছে, যা দেখি নতুন লাগে…’। পৃথিবী এখনও প্রতিনিয়ত বদলায়, কিন্তু আমাদের চোখে কোনো কিছুই আর নতুন লাগে না। বিশ্বায়নের পৃথিবীতে আমাদের যে বিস্ময় তার কৌমার্য অক্ষুণ্ন রেখেছিলো, বাইনারির দুনিয়ায় আজ তা হারিয়ে গেছে। এখন আমরা জানি— কী হবে, হতে পারে বা হওয়া সম্ভব; সুতরাং, রবীন্দ্রনাথের মতো আমাদের আর বিস্ময়ে…

Details

জীবনাধিক জীবন

ছবিটির দিকে তাকাই এবং আবিষ্কার করি দেবব্রত বিশ্বাসকে। শিশির মঞ্চে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্নেহাংশু আচার্য, কনক বিশ্বাস ও অন্যান্যদের সঙ্গে তাঁর এই বসে থাকার ভঙ্গিমাই আমাদের কাছে মেলে ধরে দেবব্রত বিশ্বাসের যাবতীয় ইশতেহার। এই ইশতেহার কারিগরের নয়; বরং দ্রষ্টার বিশৃঙ্খলা ও কিমিতি, মৃত্যু ও শূন্যতা, পাপ ও প্রজ্ঞান একই সুরে নিবেদিত হয়েছে অসীমের…

Details

নিখিলের লাশ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের ভাঙা মেরুদণ্ড

নিখিল তালুকদারের পিতার নাম নীলকান্ত তালুকদার। কিন্তু নীলকান্ত তালুকদারের পিতার নাম আমরা জানি না, কিন্তু নিখিল তালুকদার নিশ্চয়ই তাঁর ঠাকুরদার নাম জানতেন। আমাদের পক্ষে সেই নামটি আর জেনে নেয়া সম্ভব নয়; উল্টো ঠিকুজি-কুষ্ঠিসমেত নিখিল তালুকদারকে এই মুহূর্তে মাটিচাপা দিতে পারলেই আমাদের স্বস্তিলাভ সম্ভব। আমাদের আরামদায়ক রাষ্ট্রীয় জীবনের আলুলায়িত রোজনামচায় নিখিল তালুকদার একটি অস্বস্তির নাম। বলছি…

Details

শহিদ জননী, এই চিঠি তোমাকে আমার

শহিদ জননী, কী অলৌকিক সমাপতন! ১৯২৯ সালে যখন আপনি জন্ম নিচ্ছেন— বৈশাখে-নিদাঘে অখণ্ড ভারতবর্ষের মুর্শিদাবাদে; প্রায় তখনই এরিক মারিয়া রেমার্ক তাঁর কারুবাসনা ছড়িয়ে দিচ্ছেন অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট  উপন্যাসের প্রতিটি পৃষ্ঠায়। আপনি তাহলে এই অমোঘ উপন্যাসটির সমবয়স্ক! হয়তো এ কারণেই পশ্চিম সীমান্তে হারিয়ে যাওয়া পল ব্যমারের প্রজন্মের সঙ্গে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহিদ রুমীর…

Details

‘মহানগর’: দেশভাগের প্রচ্ছন্ন পাঠ

“A women’s place is in the home”— সত্যজিৎ রায়ের মহানগর (১৯৬৩) চলচ্চিত্রে সুব্রত মজুমদারের [অভিনয়: অনিল চট্টোপাধ্যায়] এই সংলাপ বরাবরই সত্যজিৎ আলোচনায় তৎকালীন প্রেক্ষাপটের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা হিশেবে আলোচিত হয়েছে। এই আলোচনার যৌক্তিকতাও আছে। কিন্তু পঞ্চাশের দশকের কোলকাতার পটভূমিতে নির্মিত এই ছবিতে দেশভাগের যে প্রচ্ছন্ন পাঠ— তার ইঙ্গিতও বহন করে ছবিটির শুরুর দিকেই সুব্রত মজুমদারের এই…

Details

রক্তাক্ত লাল নীল দীপাবলি

প্রতি বছর সাতাশে ফেব্রুয়ারি এলে একবার করে ফিরে যাই ২০০৪ সালে; খবরের কাগজে প্রকাশিত প্রতিভাবান লেখক ও বহুমাত্রিক জ্যোতির্ময় অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত মুখের সে-ই ছবিটির কথা মনে পড়ে। আজ ষোলো বছর পেরিয়ে গেলেও সেই রক্তের ধারা থামেনি; বরং অধ্যাপক আজাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও কতোগুলো নাম— রাজীব হায়দার, অভিজিৎ রায়, অনন্ত বিজয় দাশ,…

Details